শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন

নাঈম হাসান যেন আরেক মোস্তাফিজুর রহমান!

একুশে নিউজ
  • প্রকাশিত সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৮, ৯:৩৯
  • ২৭৬ এই সময়
  • শেয়ার করুন

নাঈম হাসান যেন আরেক মোস্তাফিজুর রহমান! মাঠে যতটা সপ্রতিভ, সংবাদ সম্মেলনে ঠিক ততটাই জড়সড়। টেস্ট অভিষেকে দুর্দান্ত বোলিং করে হইচই ফেলে দিয়েছেন। এ আনন্দক্ষণে কত কিছু বলার থাকে। অথচ তাঁর প্রতিক্রিয়া হলো খুব সংক্ষিপ্ত। সেটিতেও বড় অবদান বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজারের। সংবাদ সম্মেলনে আসার পথে সম্ভাব্য প্রশ্ন সম্পর্কে মিডিয়া ম্যানেজার যেভাবে ধারণা দিয়েছেন, নাঈম সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছেন।

সংবাদমাধ্যমের সামনে জড়সড় থাকলেও এই নাঈমই মাঠে একেবারে অন্য রকম। প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছেন, কোনো স্নায়ুচাপ নেই। নেই কোনো জড়তা। স্বচ্ছন্দে করে যাচ্ছেন নিজের কাজটা। কীভাবে এতটা স্বাভাবিক খেলা সম্ভব হয়েছে নাঈমের? বাড়ি চট্টগ্রাম শহরের বহদ্দারহাটে। নিজের উঠোনে খেলা বলেই যে এমন স্বচ্ছন্দ পারফরম্যান্স, নাঈম তা মনে করেন না, ‘আমরা পেশাদার খেলোয়াড়, ক্রিকেট তো খেলতেই হবে। জড়তা নিয়ে খেললেও খেলতে হবে, জড়তা না থাকলেও খেলতে হবে।’

নিজের শহরে খেলা, আজ বাসা থেকে কেউ তাঁর খেলা দেখতে আসেননি। হয়তো টিভিতেই পরিবারের সবাই দেখে নিয়েছেন নাঈমের কীর্তি। যেনতেন কীর্তি নয়, টেস্টে প্রথম বোলিং করতে এসেই নাম তুলে ফেলেছেন রেকর্ড বইয়ে। অভিষেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের তাক লাগিয়ে দেওয়া আর নতুন কী! তবে নাঈমের রেকর্ডের তাৎপর্য অন্য রকম, তাঁর বয়সের কারণেই। ১৭ বছর ৩৫৫ দিনে অভিষিক্ত এই অফ স্পিনার টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো বল হাতে নিয়েই পেয়েছেন ৫ উইকেট। বাংলাদেশের তো বটেই, টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেক ৫ উইকেট পাওয়া বোলারও তিনি। টেস্ট ইতিহাসে এর চেয়ে কম বয়সে ৫ উইকেট পেয়েছেনই মাত্র দুজন। ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ উইকেট পাওয়ার সময় মোহাম্মদ আমিরের বয়স ছিল ১৭ বছর ২৫৭ দিন। আর রেকর্ডটাও আরেক পাকিস্তানির দখলে, নাসিম-উল-গনি। ১৯৫৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫ উইকেট পাওয়ার সময় বাঁ হাতি স্পিনারের বয়স ছিল ১৬ বছর ৩০৩ দিন!

খেলার সময় জানতেন না রেকর্ডের কথা। সংবাদ সম্মেলনে আসার পথে জেনেছেন। অসাধারণ এই অর্জনে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘আমি আমার স্বাভাবিক ক্রিকেটই খেলেছি। আমার কোনো লক্ষ্য ছিল না যে ৫ উইকেট, ১০ উইকেট নিতে হবে। আমি চেষ্টা করেছি প্রক্রিয়াটা ধরে রাখতে।’

নাঈম এটা ঘুরে-ফিরেই বললেন, তিনি তাঁর স্বাভাবিক খেলাটাই খেলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিষেকেই কীভাবে সম্ভব এতটা স্বাভাবিক থাকা? কাল নয়ে নেমে ভয়ডরহীন ব্যাটিং করেছেন। আজ বোলিংয়ে তো আরও দুর্দান্ত। ৬ ফুট উচ্চতা নিয়ে অফ স্পিন করেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে অবশ্য পেসার ছিলেন। তখন খুব একটা লম্বাও ছিলেন না। স্থানীয় এক কোচের পরামর্শে স্পিনার বনে গেছেন। বিশেষজ্ঞ অফ স্পিনার হিসেবেই বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের গণ্ডি পেরোনোর আগে সুযোগ পেয়ে গেছেন জাতীয় দলে। এখন তো পা-ই রেখেছেন আন্তর্জাতিক আঙিনায়।

দীর্ঘদিন বিসিবির পাইপলাইনে ছিলেন বলেই হয়তো জড়তা-স্নায়ুচাপ খুব একটা জেঁকে বসেনি নাঈমের ওপর। নিজ শহরে খেলা, দীর্ঘদিন নির্বাচকদের রাডারে থাকা, জাতীয় দলের সঙ্গে নিয়মিত অনুশীলনের সুযোগ, সবশেষ জাতীয় লিগে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হওয়ার আত্মবিশ্বাস, সব কথার শেষ কথা, চট্টগ্রামের স্পিন-সহায়ক উইকেট—অভিষেকে নাঈমের দুর্দান্ত বোলিংয়ের অনেক কারণ সামনে আসতে পারে। তবে আসল কারণটা অনেক আগেই বলে গেছেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য, ‘আঠারো বছর বয়সের নেই ভয়।’

মাঠে ভয়ডরহীন থাকলেও, শুরুতেই বলা হয়েছে সংবাদমাধ্যম নিয়ে অদ্ভুত একটা ভীতি তাঁর আছে। ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে বলেন, ‘৫ উইকেট পাওয়ার মতো মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলাটাও কম কঠিন নয়!’ তাঁর আদর্শ অস্ট্রেলিয়ার নাথান লায়ন। লায়নের মতো দুর্দান্ত স্পিনার হতে অনেক পথ হাঁটতে হবে তাঁকে। তবে তাইজুল-মিরাজদের মতো নাঈমও আবির্ভাবেই বার্তা দিয়েছেন, তাঁর ওপর আস্থা রাখা যেতে পারে। কথা কম বললেও কাজে তিনি ভীষণ পটু!

এই বিভাগের আরো খবর

ব্রেকিং:

আফগানিস্তানে হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা পাকিস্তানের

১৭ জেলায় হতে পারে ৬০ কিমি বেগে ঝড়, সতর্ক সংকেত

সরকারি হাসপাতালগুলোতে আছে রাসেল’স ভাইপারের এন্টিভেনম

বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে, কোথাও কোথাও ভারি বর্ষণের শঙ্কা

শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে অচল ৫৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

স্ত্রীকে ফেসবুক থেকে দূরে রাখা নিষ্ঠুরতার শামিল

রূপগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়ি ঘিরে রেখেছে এটিইউ

ধনী কর্মকর্তাদের সম্পদের উৎসের খোঁজ শুরু করছে দুদক

টি-২০ বিশ্বকাপে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরার পুরস্কার পেলেন যারা

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের মানতে হবে যেসব বিশেষ নির্দেশনা