প্রবন্ধ রচনা, গবেষণা ও কথা সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখায় ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৫’ পেলেন আকিমুন রহমান।
শনিবার জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে কবি আসাদ চৌধুরী পুরস্কার তুলে দেন কথা সাহিত্যিক, লেখক ও গবেষক আকিমুন রহমানের হাতে।
পুরস্কার হিসেবে লেখককে উত্তরীয়, মানপত্র, ক্রেস্ট ও চেক তুলে দেন অতিথিরা। অনন্যা সাহিত্য পুরস্কারের ২৫ বছরে ২৪তম ব্যক্তি হিসেবে আকিমুন রহমান এই পুরস্কার পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পুরস্কারপ্রাপ্ত আকিমুন রহমানের সাহিত্যকর্মের ওপর একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। পরে শুরু হয় আলোচনা পর্ব।
পাক্ষিক পত্রিকা অনন্যার সম্পাদক তাসমিমা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাবন্ধিক বেগম আকতার কামাল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, “আমার দুর্ভাগ্য আকিমুন রহমানের লেখা আমি আগে পড়িনি। মাত্র দুটি লেখা পড়েছি। তাতেই আমি তার ভক্ত হয়ে গেছি। তিনি বিনোদনের জন্য লেখেন না। চিন্তা, দায়বদ্ধতার জন্য লেখেন, তা তার লেখায় স্পষ্ট। আমার মনে হয়েছে তার অনুসন্ধান এক জায়গায় সীমাবদ্ধ নয়। সুন্দর একটি পৃথিবী নির্মাণের ইচ্ছা নিয়ে তিনি লিখে চলেছেন।”
বেগম আকতার কামাল বলেন, “শুধুমাত্র মনের আনন্দের জন্য নয়, সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে লেখেন আকিমুন রহমান। সমাজে নারীদের পিছনের সারি থেকে সামনের সারিতে আনার কাজটি করে যাচ্ছেন তিনি।
“নারীদের ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে তার লেখনী। তার মুক্তমনা চোখ বাংলা সাহিত্যের জন্য সম্পদ।”
পুরস্কাপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় আকিমুন রহমান বলেন, “অত্যন্ত বিব্রতবোধ করছি, তবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যারা আমাকে বিবেচিত করেছেন। আমি এখানেই থেমে যেতে চাই না। এই পুরস্কার আমাকে আরও চাঞ্চল্য করবে বলে আশা রাখি।”
আকিমুন রহমান ১৯৬০ সালের ১০ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর লাভের পর তিনি পিএইচডি করেন বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ূন আজাদের তত্ত্বাবধানে।
‘আধুনিক বাংলা উপন্যাসে বাস্তবতার স্বরূপ (১৯২০-৫০)’ শিরোনামে তার গবেষণাপত্রটি বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়।
১৯৯৬ সালে তার রচিত ‘বিবি থেকে বেগম’ গ্রন্থ প্রকাশের পর তিনি আলোচনায় আসেন।
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে আছে সোনার খড়কুটো, পুরুষের পৃথিবীতে এক মেয়ে, রক্তপূঁজে গেঁথে যাওয়া মাছি, এইসব নিভৃত কুহক, জীবনের পুরনো বৃত্তান্ত, নিরন্তর পুরুষ ভাবনা, পৌরাণিক পুরুষ ইত্যাদি।
লেখালেখির পাশাপাশি তিনি বর্তমানে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাও করছেন।