কীভাবে এই সুনামির উৎপত্তি?
অগ্ন্যুৎপাত বিশেষজ্ঞ জেস ফিনিক্স বিবিসিকে বলেছেন, যখন আগ্নেয়গিরি থেকে উদ্গীরণ শুরু হয়, তখন উত্তপ্ত ম্যাগমা ভূগর্ভ থেকে ঠেলে ওপরে ওঠে। এর ফলে অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা পাথরগুলো ভাঙতে শুরু করে, যার ফলে ঘটতে পারে ভূমিধস।
আনাক ক্র্যাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির কিছু অংশ রয়েছে সাগরের নিচে। তিনি বলছেন “সে কারণে এক্ষেত্রে ভূমিধস হয়েছে সমুদ্রের তলদেশে। এবং এর ফলে সাগরে তৈরি হয়েছে প্রবল জলোচ্ছ্বাস।” এর থেকেই সুন্দা প্রণালীতে সুনামি সৃষ্টি সম্ভব বরে তিনি মনে করছেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আনাক ক্র্যাকাতোয়া আগ্নেয়গিরিকে সক্রিয় হতে দেখা গেছে। ইন্দোনেশিয়ার জিওলজিক্যাল সংস্থা বলছে, শুক্রবার রাতে ওই আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে দু মিনিট ১২ সেকেণ্ড ধরে। এর ফলে পাহাড়ের মাথায় ৪০০ মিটার উপর পর্যন্ত তৈরি হয়েছিল ছাইয়ের মেঘ।
ইন্দোনেশিয়া কি সুনামি-প্রবণ?
ইন্দোনেশিয়ায় সুনামির বড়ধরনের আশঙ্কা রয়েছে। কারণ দ্বীপটি রিং অফ ফায়ারের (অগ্নি-বলয়) মধ্যে অবস্থিত। গোটা প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা যে বলয়ের মধ্যে তাতে ঘন ঘন ভূমিকম্প ও অগ্ন্যুৎপাত ঘটার আশঙ্কা যে বৃত্তের মধ্যে তাকে বলা হয় অগ্নি বলয় কিংবা রিং অফ ফায়ার।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়াসি দ্বীপে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিল দু হাজারের বেশি মানুষ। ওই ভূমিকম্পের কারণেও উপকূলীয় পালু শহরকে গ্রাস করেছিল এক বিধ্বংসী সুনামি।
এর আগে ২০০৪ সালে ২৬শে ডিসেম্বর, ভারত মহাসাগরে শক্তিশালী ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট একের পর এক প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ১৪টি দেশে প্রাণ হারিয়েছিল প্রায় ২ লাখ ২৮ হাজার মানুষ। যার অধিকাংশই ইন্দোনেশিয়ার। তবে অগ্ন্যুৎপাতের কারণে এ ধরনের সুনামির নজির তুলনামূলক হিসাবে কম।
ক্র্যাকাতোয়া- কতটা বিপদজনক?
আনাক ক্র্যাকাতোয়া নতুন দ্বীপ। ক্র্যাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির উদ্গীরণ থেকে এর জন্ম ১৯২৭ সালে। ১৮৮৩ সালের আগস্টে ক্র্যাকাতোয়ায় যে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল তা পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত হিসাবে নথিভুক্ত হয়ে আছে। কী ঘটেছিল সেই অগ্ন্যুৎপাতের ফলে-
সুনামিতে আবারও বিপর্যস্ত আর লন্ডভণ্ড হয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়া। সর্বশেষ সংবাদ পাওয়া পর্যন্ত ২২২ জন সুনামির কবলে প্রাণ হারিয়েছেন। মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন প্রায় ৮৪৩ জন। আর নিখোঁজ রয়েছেন অসংখ্য মানুষ। এই দ্বীপরাষ্টটি বারবার সুনামির কবলে পড়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত শনিবার স্থানীয় সময় আনুমানিক রাত ৯টায় কোনোরকম পূর্বাভাস ছাড়াই দক্ষিণ সুমাত্রায় সুনামিটি আঘাত হানে। সুনামির আঘাতে শত শত বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশটির দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা বলছে, সুন্দা প্রণালীর উপকূলীয় এলাকায় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকেই এই সুনামির উৎপত্তি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে প্রকাশিত বিধ্বস্ত ইন্দোনেশিয়ার
সুনামির আঘাতের কিছু ছবি