শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন

আপনারা ভোট দিন, আমরা উন্নয়ন দেব : প্রাধানমন্ত্রী

একুশে নিউজ
  • প্রকাশিত সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:১৬
  • ১৮৫ এই সময়
  • শেয়ার করুন

প্রাধানমন্ত্রী রবিবার বিকেলে পীরগঞ্জ হাইস্কুল মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় বলেন।

আরো উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার জন্য তাঁর দলকে পুনর্নির্বাচিত করতে জন্য তরুণ, বয়োবৃদ্ধ এবং মা-বোন সহ সকলের কাছে ভোট প্রত্যাশা করেছেন।

তিনি বলেন, ‘তারুণ্যের কাছে ভোট চাই, আমাদের যারা মা-বোনেরা আছেন তাঁদের কাছে ভোট চাই, আমাদের যারা বয়োবৃদ্ধ আছেন- সকলের কাছেই ভোট চাই।’ ‘আপনারা ভোট দিন, আমরা উন্নয়ন দেব, সমৃদ্ধি দেব, সুন্দর জীবন দেব, উন্নত জীবন দেব’যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি নৌকার পালে হাওয়া লেগেছে, নৌকার বিজয় হবে।’

তিনি ধানের শীষ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি-জামাত জোটের মধ্যে যারা জামাত ’৭১ সালে তারা ছিল যুদ্ধাপরাধী। তারা এদেশে গণহত্যা চালিয়েছে, মা-বোনের ইজ্জত লুটেছে, তারা এদেশের মানুষকে খুন করেছে। আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। বিএনপি এই মিঠা পুকুর থেকে শুরু করে একেবারে সাদুল্লাহপুর গোবিন্দ গঞ্জ, পলাশবাড়ি পুরো এলাকায় বাসে আগুন দিয়ে বাস পুড়িয়েছে। ট্রাকে আগুন দিয়েছে, রাস্তা-ঘাট কেটেছে, গাছ কেটেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা একবার চিন্তা করেন- সিএনজি, লঞ্চ, বাস, প্রাইভেট কারে পেট্রল ঢেলে মানুষকে আগুন দিয়ে যারা পোড়ায় তারা মানুষ নয়, দানব। ওদের কোন স্থান এই বাংলার মাটিতে হবে না। কাজেই ঐ ধানের শীষ ওয়ালাদের গায়ে মানুষ পোড়া গন্ধ, তাদের থেকে সাবধান থাকবেন।

প্রধানমন্ত্রী পীরগঞ্জে এসেই প্রথমে তাঁর স্বামী এবং দেশের প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারত করেন।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর পীরগঞ্জের ফতেহপুর এসে তাঁর স্বামী এবং দেশের প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী মরহুম ড. ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারত ও মোনাজাত করেন। ছবি- পিআইডি

এরআগে দুপুরে তিনি তারাগঞ্জে তারাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেন।

প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর তারাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেন। ছবি- পিআইডি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পীরগঞ্জ থেকে নৌকার প্রার্থী জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীও পীরগঞ্জের সমাবেশে বক্তৃতা করেন এবং শেখ হাসিনা রংপুরে তাঁর দল এবং মহাজোটের প্রার্থীদেরকেও সভায় সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

এছাড়া, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং আহমেদ হোসেন, পীরগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মন্ডল এবং বিশিষ্ট অভিনেতা ফেরদৌস, পুর্ণিমা এবং তারিনও সমাবেশে বক্তৃতা করেন।

পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজিজুর রাঙ্গা সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।

এক সময়কার অবহেলিত এবং মঙ্গা পীড়িত রংপুরের উন্নয়ন আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরই হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামীতে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসতে পারলে দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সফলভাবে বাস্তবায়নের পাশাপাশি চলমান উন্নয়নের ধারাকে আরো অনেকদূর নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন।

প্রধানমন্ত্রী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে তাঁর নিজের কন্যা আখ্যায়িত করে বলেন, আপনারা তাঁকে নির্বাচিত করতে পারলে এবং আমরা ক্ষমতায় আসতে পারলে তাঁকে আবার জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত করতে পারবো। কাজেই আমি দোয়া করি তাঁকে আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।

তিনি এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মন্ডলের আওয়ামী লীগে যোগদানকে স্বাগত জানিয়ে পীরগঞ্জের উন্নয়নে একটি মাস্টার প্লান প্রণয়নের জন্য তাঁকে বলেছেন বলেও জানান।

পীরগঞ্জের উন্নয়নের তাঁর সরকারের পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি ব্রীজ করে দিয়েছি। রাস্তা করে দিয়েছি, আজকে আমার করা ব্রীজ দিয়ে আমি চলে যাব দিনাজপুরে।

তিনি পীরগঞ্জে শতভাগ বিদ্যুতায়নের প্রসংগ উল্লেখ করে বলেন, আজকে সারা পীরগঞ্জে শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়ে দিয়েছি। প্রত্যেক ঘরে আজকে বিদ্যুতের আলো জ্বলছে। এজন্য প্রত্যেকটি ছেলে-মেয়ের আজকে কাজ করার সুযোগ হয়েছে।

তিনি এ সময় ২০২১ সাল নাগাদ দেশকে শতভাগ বিদ্যুতায়নে তাঁর সরকারের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন।

তিনি রংপুরে রেল যোগাযোগ স্থাপন, বঙ্গবন্ধু ও তিস্তা নেতু নির্মাণ এবং ঢাকা-রংপুর ৪ লেনের হাইওয়ে নির্মাণে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, আপনারা শুধু একটা জিনিসই চিন্তা করবেন ১০ বছর আগেও এই এলাকা কোথায় ছিল আর আজকে কোথায় এসেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি। ছেলে-মেয়েরা সেখানে বসে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপন করে বাংলাদেশ মহাকাশ জয় করেছে।

এই স্যাটলাইট নির্মাণে তাঁর ছেলে এবং তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়’র বিরাট অবদান রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের লক্ষ্য এই দেশে আর কোন মানুষ দরিদ্র থাকবে না। গৃহহারা থাকবে না। রোগে ভুগে কষ্ট পাবে না।

তিনি এসময় গৃহহীনদের ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ায় তাঁর সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের এবং রংপুর মেডিকেল কলেজের উন্নয়ন এবং বার্ন ইউনিট প্রতিষ্ঠা সহ চিকিৎসা সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর সরকারের কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথাও তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা আগামীর নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে বলেন, শুধু আপনাদের কাছে এটাই চাই এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন এবং আপনাদের এই পীরগঞ্জেও আমাকেই ভোট দেবেন, শুধু ব্যালটে নামটা শিরীন শারমিন চৌধুরীর থাকবে।

শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপার্সণের কথা উল্লেখ করে বলেন, আজকে তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে খেয়ে জেলে। আর তার ছেলে তারেক টাকা পাচার করেছে, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাজাপাপ্ত, ২১ আগস্ট আওয়ামী রীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে আইভি রহমান সহ ২ কে হত্যার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী। এরা দেশের কি উন্নয়ন করবে। এরা দেশের কি কল্যাণ করবে। কাজেই এদের থেকে দেশবাসীকে সাবধান হতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এদেশে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন তাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মানুষের উন্নতি হয়। তা গত ১০ বছরে আপনারা দেখেছেন।

তিনি যুব সমাজের জন্য কর্মসংস্থানের উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে মাত্র ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জে বিনা জামানতে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। এই ঋণ নিয়ে যুব সমাজ স্বাবলম্বী হতে পারবে। কারো কাছে চাইতে হবে না, নিজেরাই চাকরী দিতে পারবে।

দেশব্যাপী ডিজিটাল সেন্টার এবং ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্র থাকার ফলে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ায় ঘরে বসেই আজকে যুব সমাজের আয়ের পথ খুলে গেছে।

‘আমরা তারুণ্যের শক্তি কাজে লাগিয়ে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাব’, যোগ করেন শেখ হাসিনা বলেন।

তিনি দেশের মানুষের অব্যাহত কল্যাণ সাধণে সকলের দোয়া কামণা করে বলেন, বাংলাদেশ হবে দারিদ্র মুক্ত, ক্ষুধা মুক্ত, সোনার বাংলাদেশ।

যে বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন। সেই বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো।

তিনি বলেন, ২০২০ সালে আমরা জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী পালন করবো। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবো, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ।

২০৭১ সালে স্বাধীনতার শত বার্ষিকী আমরা উদযাপন করবো, ২১০০ ডেল্টা প্লান করে দিয়েছি, দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে আজকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে মা-বোনের এখানে আছেন। আমরা নারীর ক্ষমতায়নে যেভাবে সুযোগ করে দিয়েছি অতীতে কোন সরকার করেনি। কাজেই সকলের কাছে ভোট চাই।

এই বিভাগের আরো খবর

ব্রেকিং:

আফগানিস্তানে হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা পাকিস্তানের

১৭ জেলায় হতে পারে ৬০ কিমি বেগে ঝড়, সতর্ক সংকেত

সরকারি হাসপাতালগুলোতে আছে রাসেল’স ভাইপারের এন্টিভেনম

বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে, কোথাও কোথাও ভারি বর্ষণের শঙ্কা

শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে অচল ৫৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

স্ত্রীকে ফেসবুক থেকে দূরে রাখা নিষ্ঠুরতার শামিল

রূপগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়ি ঘিরে রেখেছে এটিইউ

ধনী কর্মকর্তাদের সম্পদের উৎসের খোঁজ শুরু করছে দুদক

টি-২০ বিশ্বকাপে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরার পুরস্কার পেলেন যারা

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের মানতে হবে যেসব বিশেষ নির্দেশনা