সংবাদ সংগ্রহের সময় তিন সাংবাদিককে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শাখা ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার তিন সাংবাদিক হলেন- কালের কণ্ঠের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহেদী হাসান, জনকণ্ঠের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার মুনতাসির জিহাদ ও সাংবাদিক কবির কানন।
অভিযুক্তরা হলেন- হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-দফতর সম্পাদক আসিফ রায়হান মিনার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এসএম মাহমুদ সেতু, যুগ্ম-সম্পাদক নাফিউল আলম ফুজি, প্রচার সম্পাদক নিলাদ্রি নিলয় দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজিদ মাহমুদ অয়ন, সহ-সভাপতি সন্টুর রহমান প্রমুখ।তারা সবাই ছাত্রলীগের সাবেক নেতা।
তাদের সঙ্গে আরও ছিলেন- মেকানিক্যাল বিভাগের অর্ণব চক্রবর্তী সৌমিক, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রাউফুন রাজন ঝলক, মেকানিক্যাল বিভাগের মিনহাজুল ইসলাম, নেভাল আর্কিটেকচার বিভাগের নিলাদ্রী নিলয় দাস ও মেহেদী হাসান, তড়িত কৌশল বিভাগের ফারহান জাওয়াদ।
ঘটনার জন্য রাত ১২টার দিকে বুয়েট ছাত্রলীগের সভপতি খন্দকার জামী-উস সানী ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এসে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন না বলে জানান।
জানা গেছে, হলটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে আটকে রাখা হয়েছে এমন খবর জানাজানি হওয়ায় হলের গেইট বন্ধ রাখে ছাত্রলীগ নেতারা। এ সময় কাউকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছিল না। এরই মধ্যে ওই তিন সাংবাদিক নিজেদের পরিচয় দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
ভুক্তভোগীরা জানান, হলে প্রবেশের পাঁচ মিনিটের মধ্যে শেরেবাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে হলে প্রবেশের কারণ জানতে চায়। এ সময় শিক্ষার্থী অপহরণের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের মারধর করেন। কেড়ে নেন মোবাইল ফোন, পরিচয়পত্র ও মানিব্যাগ। সেখান থেকে তাদের নেয়া হয় হলের ক্রীড়া কক্ষে। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে কক্ষটিতে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। পরবর্তীতে ঘটনাটি জানাজানি হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।
মারধরের বিষয়ে ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ধরে নিয়ে গেছে এমন তথ্য পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম। কারণ ঘটনাটির বিষয়ে একেকজন একেক রকম তথ্য দিচ্ছিল। হলের ভেতর প্রবেশের পর হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে মারধর করে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রাব্বানী বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এটা একটি দুঃখজনক ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বুয়েটের শেরেবাংলা হল প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।