বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরাপদ নির্বাচনের আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রভাবশালী মার্কিন কংগ্রেসম্যান জিম ব্যাংকস বলেছেন, জামায়াতে ইসলামির মতো গ্রুপ এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হুমকি।
সম্প্রতি ওয়াশিংটনে ‘স্ট্যাবিলিটি, ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইসলামিজম’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
জিম ব্যাংকস বলেন, কয়েক দিন আগেও দুইজন রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনকে সামনে রেখে সহিংসতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। ইউএসএআইডি ও মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরকে বলা হয়েছে বাংলাদেশে যেন উগ্রবাদী গোষ্ঠী সংশ্লিষ্ট কোনো সংগঠনকে সহায়তা করা না হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর মতো দলগুলো এই উন্নয়নের জন্য হুমকি।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র খুবই ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি বলেন, সারা বিশ্ব বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্র চায় এখানে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন এবং সবার ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত হোক।
আলোচনা সভায় আরও অংশ নেন লিবার্টি সাউথ এশিয়ার সেথ ওল্ডমিক্সন, মিডলইস্ট ফোরামের স্যাম ওয়েস্ট্রপ ও ইনভেস্টিগেটিভ প্রজেক্ট অন টেরোরিজমের আভা শংকর।
বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে প্রস্তাব পাস
বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে এবং বাধাহীন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সকল রাজনৈতিক দল ও বিচারিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস।
গত বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে সর্বসম্মতভাবে এ বিষয়ক প্রস্তাবটি পাস হয়। যাতে বাংলাদেশে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু, স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য নির্বাচনের আয়োজনে সরকারকে আহ্বান জানানো হয়।
প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয় কংগ্রেস সদস্য টেড ইয়োহো, এলিয়ট এনজেল, ব্র্যাড শেরমান, স্টিভ শাবট, জেরাল্ড কনোলি ও ড্যারেন সোটোর উদ্যোগে।
মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া এই প্রস্তাবে বাংলাদেশের নির্বাচন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং রোহিঙ্গাদের বিষয়ে চারটি প্রসঙ্গ উঠে আসে।
প্রথম প্রস্তাবে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন কংগ্রেস সদস্যরা।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে বাংলাদেশের সরকারকে মতপ্রকাশের ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে বলার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে সরকারকে সাড়া দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
তৃতীয় প্রস্তাবে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার নিশ্চিত করে ভোটারদের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে এবং নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক নেতা ও বিচারিক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের প্রত্যাশা আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হবে।
শেষ প্রস্তাবটি আনা হয় রোহিঙ্গাদের বিষয়ে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার কারণে সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মানবসৃষ্ট সবচেয়ে বড় মানবিক এই বিপর্যয়ের মতো জটিল পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা।