এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে পাঁচ টাকা। এনিয়ে গত দেড় মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ২০ টাকা। পেঁয়াজের পাশাপাশি স্বস্তি দেখা দিয়েছে সবজির দামে। তবে হঠাৎ করেই বেড়েছে ফার্মের মুরগির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ, হাজীপাড়া, খিলগাঁও বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছেে
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাজারে এখন পুরাতন দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি নতুন দেশি পেঁয়াজও ভরপুর। যে কারণে সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে গেছে। তবে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
কারওয়ান বাজারে পুরাতন দেশি পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। আর নতুন দেশি পেঁয়াজের পাল্লা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে বাজারটিতে পুরাতন দেশি পেঁয়াজের পাল্লা বিক্রি হয় ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। আর নতুন দেশি পেঁয়াজের পাল্লা বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১১০ টাকায়।
ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, ‘গত বছর এক কেজি পেঁয়াজের যে দাম ছিল এখন সে টাকা দিয়ে এক পাল্লা পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে। নতুন পেঁয়াজের পাশাপাশি পুরাতন পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় এবার দাম কম। সরবরাহে ঘাটতি না হলে সহসা দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই।’
রামপুরা ও খিলগাঁও অঞ্চলের বাজারগুলোতে পুরাতন দেশি পেঁয়াজের কেজি ২৫ টাকা এবং নতুন দেশি পেঁয়াজ ২০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।
মালিবাগ হাজীপাড়া বউ বাজারের ব্যবসায়ী মো. সাইদুর বলেন, ‘গত সপ্তাহে যে দেশি পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি এখন তা ২৫ টাকায় বিক্রি করছি। নতুন পেঁয়াজের দামও কমে গেছে। গত সপ্তাহে ৩০ টাকায় বিক্রি হাওয়া নতুন পেঁয়াজ এখন ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
পেঁয়াজের দাম কমলেও গত সপ্তাহের তুলনায় ফার্মের মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। বাজারভেদে সাদা ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি।
রামপুরার ব্যবসায়ী কাউসার আলী বলেন, ‘গত তিনদিন ধরে মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। গত শুক্রবার ব্রয়লার মুরগি ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন সে মুরগি ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে। আড়ত থেকে বেশি নামে কিনে আনার কারণে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
মুরগির দামে উত্তাপ ছড়ালেও সবজির দামে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলছে। বাজারগুলোতে ভরপুর শাক-সবজি থাকায় দামও তুলনামূলক কিছুটা কম। শীতের সব ধরনের সবজির পাশাপাশি বাজারে ভরপুর রয়েছে নতুন আলু, গাজর, কাঁচা ও পাকা টমেটো। ফলে অনেক সবজি এখন মাত্র ১০ টাকা কেজিতেও পাওয়া যাচ্ছে।
বাজারে এখন সব থেকে সস্তা সবজি তালিকায় রয়েছে বেগুন। বাজার ও মানভেদে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি। একই দামে পাওয়া যাচ্ছে শালগম। শিম পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৪০ টাকা কেজি।
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে নতুন আসা পাকা টমেটোর দাম কিছুটা কমেছে। এ সবজিটি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। আর আর মজুদ করা নিম্নমানের পাকা টমেটো আগের মতোই ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
দাম অপরিবর্তিত রয়েছে নতুন আলুর। আগের সপ্তাহের মতোই নতুন আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। গাজর আগের সপ্তাহের মতোই ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে শীতের সবজি হিসেবে পরিচিত ফুলকপি বাজার ও মানভেদে পাওয়া যাচ্ছে ১০ থেকে ৩০ টাকায়। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা পিস। কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০-৪০ টাকা কেজি। মুলা বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি।
পালং শাক বিক্রি হচ্ছে ৫-১৫ টাকা আঁটি। লাল ও সবুজ শাকও বিক্রি হচ্ছে একই টাকায়। লাউ শাক পাওয়া যাচ্ছে ২০-৩০ টাকায়। ১০-২০ টাকা আঁটি পাওয়া যাচ্ছে পুঁইশাক।
দাম অপরিবর্তিত থাকা কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। আর এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) হিসাবে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আগের মতোই গরুর মাংস ৪৮০-৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৬৫০-৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজার গিয়ে জানা যায়, ‘এক পাল্লা (৫ কেজি) শিম কিনলাম ৪০ টাকা দিয়ে। বেগুন এক পাল্লা চাইল ৩০ টাকা। পাকা টমেটোর পাল্লা নিয়েছে ১৮০ টাকা।’ শিম, বেগুন, টমেটোর মতো এখন সব সবজির দাম তুলনামূলক কম। দাম এমন থাকলে সাধারণ মানুষ ইচ্ছামতো সবজি খাওয়ার সুযোগ পাবে।