ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন সামনে রেখে কতগুলো দল-উপদল ও গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। এদের মধ্যে যুদ্ধাপরাধী, তাদের সঙ্গে সংগঠিত কিছু মানুষ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ছত্রচ্ছায়ায় লালিত-পালিত কিছু মানুষ রয়েছে ৷ দল-উপদল ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে তারা বিজয়ের এই মাসকে কলঙ্কিত করছে। নতুন মাত্রা ও নতুন পরিচয়ে তাদের আত্মপ্রকাশ ঘটা শুরু হয়েছে। এরা পুরোনো মদ, আবির্ভূত হয়েছে নতুন বোতলে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে আখতারুজ্জামান এসব কথা বলেন ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে এই সভার আয়োজন করা হয় ৷
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশটি সাম্প্রদায়িক চরিত্র ধারণ করতে থাকল ৷ বাঙালি জনগোষ্ঠীর ওপর শুরু হলো নিপীড়ন ও বৈষম্যমূলক আচরণ। শ্রেণিকক্ষে এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তাঁরা পাকিস্তান রাষ্ট্রের দুষ্ট চরিত্র ব্যাখ্যা করতে শুরু করেন ৷ তাঁরা ন্যায্যতা ও সাম্যের ভিত্তিতে অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণের কথা বলেন। ঠিক এই মুহূর্তেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনাভিত্তিক রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ গঠন করেন।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সময় সংস্কৃতির ওপর আঘাত এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা ভিন্ন ধরনের অবস্থান নিয়েছিলেন। যাঁরা মানুষের মনস্তাত্ত্বিক জগতে পরিবর্তন এনে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন, পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তাঁদের চিহ্নিত করে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। একাত্তরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এ কাজে আলবদর, আল শামস বাহিনীকে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করা হয়। মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের প্রধান রাও ফরমান আলী ৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামানের সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, শহীদ অধ্যাপক গিয়াসউদ্দীন আহমদের বোন সাজেদা বানু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক তাজিন আজিজ চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বেশ কয়েকজন শিক্ষক এই আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ৷