শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন

মাশরাফির অকপট স্বীকারোক্তি

একুশে নিউজ
  • প্রকাশিত সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৫:৪৬
  • ২৫০ এই সময়
  • শেয়ার করুন

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কোয়ালিটি ফাস্ট বোলিং খেলতে পারেন না ঠিকমত। তাদের সমস্যা হয়। তারা বলের ঠিক পিছনে শরীর না নিয়ে গতি, বাউন্স আর সুইং না বুঝে অকাতরে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। আর দুর্মুখেরা আরও একপ্রস্থ এগিয়ে তীর্যক কথা বলেন, টিকা টিপ্পনী কাটেন- বিশ্বমানের ফাস্ট বোলিং মোকাবিলার পর্যাপ্ত সামর্থ্য নেই বাংলাদেশের।

সেগুলোকে ঠিক সমালোচনা ও তীর্যক মন্তব্য বলা বোধকরি ঠিক হবে না। ইতিহাস জানাচ্ছে, এক সময় কোয়ালিটি ফাস্ট বোলিং খেলতে ঠিকই সমস্যা হতো। টেস্টে এখনো ক্ষুরধার বোলিংয়ের মুখে বালির বাঁধের মত হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ে পুরো ব্যাটিং লাইনআপ।

এইতো চার মাস আগে জুলাইতে অ্যান্টিগার নর্থ সাউন্ডের স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাস্ট বোলার কেমার রোচ, জেসন হোল্ডার এবং শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বিধ্বংসী বোলিংয়ে পুড়ে ছারখার ব্যাংলাদেশ ব্যাটিং। ৪৩ রানের মামুলি স্কোরে ইনিংস শেষ হওয়ায় ধারালো ফাস্টবোলিংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সামর্থ্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।

তবে আশার কথা সীমিত ওভারের ফরম্যাটে কোয়ালিটি আর বিশ্বমানের ফাস্ট বোলিংও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সেভাবে টলাতে পারে না। পারলে আর যাই হোক, দেশে-বিদেশে ওয়ানডেতে সাফল্যের ভান্ডার এত সমৃদ্ধ হতো না। ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার মত দলের বিপক্ষে সিরিজ জেতাও সম্ভব হতো না কিছুতেই।

কিন্তু তারপরও ফ্রন্টলাইন ব্যাটিং তাসের ঘরের মত বারবার শুরুতে, অল্প সময় ও সংগ্রহে ভেঙ্গে পড়ায় ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে টাইগারদের ব্যাটিং সামর্থ্য হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ।

এইতো কদিন আগে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ অধিনায়কও প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের যত দুর্বলতা ফাস্ট বোলিংয়ে। তিনি যেহেতু টপ ও মিডল অর্ডারের কথা আলাদা করে বলেননি। ঢালাও মন্তব্য করেছেন, তাই ফাস্ট বোলিং ঠিকমত মোকাবিলা করতে না পারার দায়টা তামিম, লিটন, ইমরুল, সৌম্য, মুশফিক, সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ- সবার ওপরেই বর্তায়।

প্রশ্ন হলো তারা কি সত্যিই দুর্দান্ত ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে নুয়ে পড়েন, মাথা তুলে দাঁড়ানোর সামর্থ্য রাখেন না? ঢাকায় আগের ম্যাচে ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলার ওশান থমাসের গড়পড়তা ১৪৫ থেকে ১৪৭ কিলোমিটার গতির বলে ইমরুল, মুশফিক আর সৌম্য সরকারের মত প্রতিষ্ঠিত ও ফ্রন্টলাইন ব্যাটসম্যানের আউট হওয়ায় সে প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে।

শুক্রবার শেষ ওয়ানডের আগে (বৃহস্পতিবার) সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনেও সে প্রশ্ন উঠলো। অধিনায়ক মাশরাফির কাছে জানতে চাওয়া হলো, ‘বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কি কোয়ালিটি ফাস্ট বোলিং সামলাতে পারছেন না ঠিক মত? ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে কি সমস্যা হয় তাদের?

জবাবে মাশরাফি অনেক কথার ভিড়ে একটি কথা পরিষ্কার করে দিয়েছেন। তার কথার সারমর্ম হলো, ‘খুব অস্বাভাবিক জোরে বোলিং হলে ভিন্ন কথা। অস্বাভাবিক গতির বোলিং তোড় সামলানো সব সময়ই কঠিন। খুব কঠিন। এক্সট্রিম পেস অবশ্যই সমস্যা।

তবে এ ক্ষেত্রে শুধু নিজ দলের দোষ দিতে নারাজ টাইগার অধিনায়ক। তার ভাষায়, শুধু আমাদের ব্যাটসম্যানদের দোষ দিয়ে লাভ হবে না। খুব জোরে আসা ডেলিভারি পৃথিবীর সব ব্যাটসম্যানের জন্যই অস্বস্তির কারণ।

মাশরাফির মূল্যায়ন, আগের দুই ম্যাচেই বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাস্ট বোলিং ভালই সামলেছে। তাই তো মুখে এমন কথা, ‘ওদের পেস বোলিংকে কিন্তু আমরা দুই ম্যাচেই সামাল দিয়েছি। এটা ঠিক, শুরুতে একটা-দুইটা উইকেট পড়েছে। শেষ ম্যাচেও যদি দেখেন, মুশফিক ও তামিমকে কিন্তু ওরা পেস বোলিং দিয়ে খুব একটা ভোগাতে পারেনি। একই সঙ্গে রিয়াদকেও না। ইনিংসের শুরুতে হয়তো কিছুটা হতে পারে, এটা স্বাভাবিক। সাকিবও খুব আরামসেই খেলেছে এবং শটসও নিয়েছে অনায়াসে। আমার মনে হয় না, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাস্ট বোলাররা খুব একটা কিছু করতে পেরেছে।

তবে মাশরাফির অকপট স্বীকারোক্তি, ‘আগে একটা সময় ছিল যে, ফাস্টবোলাররা অনেক প্রভাব ফেলতেন বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ওপর।’ তবে টাইগার অধিনায়কের অনুভব, ‘সেদিন এখন আর নেই। গত হয়েছে।

তার জোর দাবি, ‘এখন আর সেটা ওই জায়গাতে নেই। তবে এক্সট্রিম পেসের কথা বললে যদি বলেন, তাতে তো পৃথিবীর সব ব্যাটসম্যানেরই সমস্যা হয়; কিন্তু ১৪০, ১৪২-১৪৩ কিলোমিটার গতির বল আমাদের অনেক ব্যাটসম্যান সহজেই সামলাতে পারে। তামিম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউডদের বিপক্ষে সহজেই ব্যাটিং করেছে। আমরা ওই পর্যায়টা পার করে এসেছি।

আগের ম্যাচে ওশান থমাসের জ্বলে ওঠা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিমের আউট হবার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘হয়তো বা তামিম যদি সে সময় আউট না হত, তাহলে চিত্রটা ভিন্ন হতে পারতো। একইভাবে সাকিব যদি শেষ তিন ওভারের অন্তত দুই ওভার ব্যাটিং করতে পারত, তাহলে আরও ২০টা রান সেখানে যোগ হতো।

মাশরাফির শেষ কথা, পেস বোলিংয়ের জন্যই সমস্যা হয়েছে, এমন নয়। আসল কাজ হলো, নিজেদের লক্ষ্য-পরিকল্পনার সঠিক ও যথাযথ বাস্তবায়ন। আমরা যদি সেই কাজটি করতে পারি, তাহলে আর সমস্যা হবে ন। তবে এক্সট্রিম পেসে শুধু আমাদের দলের ব্যাটসম্যানদের দোষ দিয়ে লাভ হবে না। পৃথিবীর সব ব্যাটসম্যানের জন্যই খুব দ্রুত গতির বোলিং মাথা ব্যাথার কারণ। তবে আমরা কিভাবে সামাল দিচ্ছি, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।

এই বিভাগের আরো খবর

ব্রেকিং:

আফগানিস্তানে হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা পাকিস্তানের

১৭ জেলায় হতে পারে ৬০ কিমি বেগে ঝড়, সতর্ক সংকেত

সরকারি হাসপাতালগুলোতে আছে রাসেল’স ভাইপারের এন্টিভেনম

বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে, কোথাও কোথাও ভারি বর্ষণের শঙ্কা

শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে অচল ৫৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

স্ত্রীকে ফেসবুক থেকে দূরে রাখা নিষ্ঠুরতার শামিল

রূপগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়ি ঘিরে রেখেছে এটিইউ

ধনী কর্মকর্তাদের সম্পদের উৎসের খোঁজ শুরু করছে দুদক

টি-২০ বিশ্বকাপে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরার পুরস্কার পেলেন যারা

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের মানতে হবে যেসব বিশেষ নির্দেশনা