আজ রবিবার (৮ জানুয়ারী) সকালে মিরপুরের জনতা হাউজিংয়ের এলাকার বাসায় দগ্ধ হয় ফারহান। তার শরীরের ৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। সকালেই তাকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। এখন সে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন। সেখানেই কথা হয় ফারহানের মা ফাহিমা আক্তারের সঙ্গে। পেশায় গৃহকর্মী ফাহিমা ও নির্মাণশ্রমিক হাসান খান দম্পতির একমাত্র সন্তান ফারহান। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ৮ শতাংশ দগ্ধ হলেও শিশুটি ঝুঁকিতে রয়েছে।
দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বাড়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট। আগুন পোহাতে গিয়ে কিংবা গরম পানিতে দগ্ধ হচ্ছে অনেকে। শিশুদের মধ্যে ৯০ শতাংশই দগ্ধ হচ্ছে ফুটানো গরম পানিতে।
আজ দুপুরে বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১৬ জন দগ্ধ রোগী ভর্তি। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনই শীত নিবারণের জন্য গরম করা পানি অথবা আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন শিশু, পাঁচজন ষাটোর্ধ্ব নারী ও একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী রয়েছেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, অভিভাবকরা সচেতন হলে এমন দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এস এম আইউব হোসেন জানালেন, আগে যেখানে প্রতি বছর রোগী ভর্তি হত ৫০ থেকে ৬০ হাজার। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৮৪ হাজার। প্রতিদিন জরুরি বিভাগেও আসছে কমপক্ষে ৫৫ থেকে ৬০ জন। শয্যা সংকটে মাত্র ১৫ জনকে ভর্তি করানো সম্ভব হয়।
চিকিৎসকরা জানালেন, শীতের এ সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা রোগীদের মধ্যে বেশি আসছেন গরম পানি বা আগুনে দগ্ধ হয়ে। একটু সচেতন হলে রোগী অর্ধেক কমানো সম্ভব।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানালেন, ৫০০ শয্যার এই হাসপাতালটিতে বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছে ৫৪০ জন। শুষ্ক এ মৌসুমে আগুন ও গরম পানি থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকার আহ্বান চিকিৎসকদের।
ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, গত এক বছরে দগ্ধ হয়ে সেখানে চিকিৎসা নিতে গেছেন ৮৩ হাজার ২৪৫ জন। তাঁদের তথ্য তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে সংরক্ষণ করা হয়। এগুলো হলো গরম তরলে দগ্ধ, আগুনে দগ্ধ এবং ইলেকট্রিক্যাল ও অন্যান্য। এর মধ্যে গরম তরল পড়ে দগ্ধদের হার ৫৭ শতাংশ। আগুনে দগ্ধ ৩৫ শতাংশ এবং ইলেকট্রিক্যাল ও অন্যান্যভাবে দগ্ধ ৮ শতাংশ রোগী সেখানে চিকিৎসা নিতে গেছেন।